কোরআন কি আল্লাহর বাণী?

কোরআন কি আল্লাহর বাণী?




মহানবী হজরত মুহাম্মদ সঃ কি কুরআন মাজীদ পূর্ববর্তী বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে কপি করেছিলেন?কুরআন কি আল্লাহ বাণী? 


আপনি অবশ্যই জানেন যে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সঃ একজন নিরক্ষর ব্যক্তি ছিলেন  অর্থাৎ তিনি অক্ষর জ্ঞানহীন ছিলেন। মহান আল্লাহ তালা হয়তো এটা মানুষের কাছে নিদর্শন স্বরুপই এটা করেছিলেন যাতে করে তৎকালীন যুগে যাতে কেও এই অপবাদ দিতে না পারে যে নবী মুহম্মদ সঃ বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে মুখস্থ করে তারপর বলতেছেন।আপনি ইতিহাস খুজলেও কিন্তু দেখবেন তৎকালীন অমুসলিম কাফিররা পর্যন্ত নবীজিকে কপিবাজ বা নকলবাজ প্রমান করতে পারেনি।



কোরআন অবশ্যই আল্লাহর বাণী। কোরান নিয়ে গবেষকরা কোরআনের সুরা গুলোতে একটা বিশেষ  কাঠামো দেখা যায়  যার নাম রিং স্ট্রাকচার বা রিং কম্পোজিশন।


রিং কম্পোজিশন কি?


রিং কম্পোজিশন কি সেই বিষয় এ মেরি ডগলাস একটি বিখ্যাত বই লিখেছেন যার নাম 'Thinking in Circles: An Essay on Ring Composition'। তিনি এই বইয়ে রিং কম্পোজিশন এর ব্যাখা দিয়েছেন। রিং কম্পোজিশন এর গঠন অনেকটা এমন যে সুরার শুরুর অংশ এবং শেষের অংশ থাকে একে অপরের প্রতিফলক। অর্থাৎ লেখাগুলোর অর্থ মিল বিদ্যমান। মুল অর্থটা ঠিক মাঝামাঝি থাকে এবং স্টার্টিং পয়েন্ট  থেকে মাঝ অংশ  পর্যন্ত এবং মাঝ অংশ থেকে এন্ডিং পর্যন্ত বক্তব্য গুলো একে অপরকে অর্থকে প্রতিফলিত করে।




এটা হচ্ছে মুলত রিং কম্পোজিশন।



 কোরআন আল্লাহর বাণী এটা প্রমান করার জন্য রিং স্ট্রাকচারই যথেষ্ট। 


 বিস্তারিত জানতে ইউটিউব থেকে দেখে নিতে পারেন।


The Remarkable Structure of the Qur’an.


এবং



বিস্তারিত জানতে ভিডিও টি পুরো দেখুন।




আল্লাহ তালা তার বাণী কুরআন  একবারে  নাজিল করেননি,নাজিল করেছেন ২৩ বছর ধরে  ভেঙে ভেঙে। সূরা ফাতিহা কোরানের প্রথম এ থাকলেও কিন্তু এই সুরা প্রথমেই নাজিল হয় নি। আবার কুরআনের একই সুরা পুরোটা একবারে নাজিল হয়নি।।


 অর্থাৎ  কোন দিন যদি সূরা বাকারার প্রথম কয়েক লাইন নাজিল হয়েছে তো অন্যদিন  সূরা ইমরানের শেষের কয়েক লাইন নাজিল হতো। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে কোরআন  নাজিল হয়েছে  প্রয়োজনের ভিত্তিতে।  অর্থাৎ পুরোপুরি আগোছালো ভাবে কোরআন নাজিল হয়েছে । 


এখন লজিকালি  চিন্তা করলেই বুঝা সম্ভব হবে কুরআন কি আল্লাহর বানী?  কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরা যাকঃ


১. রিং কম্পোজিশনের মতো স্মূক্ষ গঠন বিশিষ্ট এতবিশাল গ্রন্থ তাও আবার তাও ২৩ বছর ধরে এলোমেলোভাবে রচনা করা নিরক্ষর নবীজির পক্ষে রচনা করা টোটালি অসম্ভব।সুতরাং কোরআন আল্লাহর বাণী। 


২.এলোমেলো ভাবে নাজিল হওয়া সত্তেও নিখুত স্ট্রাকচার বলে দেয়, কুরআন আগেই অবশ্যই কোথাও না কোথাও গ্রন্থ আকারে লিপিবদ্ধ ছিল।


৩.কোরানের রচনা কাঠামো দেখে বোঝা যায় এর লেখক  একজন অর্থাৎ কোরআন অবশ্যই আল্লাহর বাণী।


৪. কোরআনের লেখক অবশ্যই ভবিষ্যৎদ্রষ্টা কেননা নিখুতভাবে ভবিষ্যৎবানী করেছেন।


আরো পড়ুন মুসলিম ছাড়া কি কেও জান্নাতে যাবে না?





এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থের সহিত কুরআনের মিল পাওয়া যায় কেন?


মহান আল্লাহ তালা যুগে যুগে অনেক নবী পাঠিয়েছেন। তাদের কাছে সর্বমোট ১০৪ খানা কিতাবে নাজিল করেছিলেন যার মধ্যে সর্বশেষ হচ্ছে পবিত্র কুরআন শরীফ। 


এই আসমানী কিতাব গুলো পাঠানো ছিল একটা দীর্ঘস্থায়ী প্রসেস।যার সমাপ্তি ঘটেছে কুরআন মাজীদ নাজিলের মাধ্যমে। এমন ও হতে পারে বর্তমানে প্রাপ্ত বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থগুলো সেই সকল কিতাবেরই ক্ষুদ্র বা পরিবর্তনীয় অংশ। 


এক্ষেত্রে কুরআন মাজীদ এর সাথে মিল থাকা দোষের কিছু না। 


উদাহরণ হিসেবে বলা যায়



আপনি যদি ক্লাস ৯ এর বিজ্ঞান বই খুলেন দেখা যাবে সেই বইয়ের অনেক অংশের সাথে ৭ম শ্রেনীর বইয়ের অনেক অংশের মিল আছে।আবার  HSC এর বই খুল দেখবেন যে ক্লাস ৯-১০ এর অনেক কিছু আছে।এখন কি আপনি বলবেন ক্লাস ৭ এর বইকে সবাই পর্যায়ক্রমে কপি করেছে? 

না বরং এইটা একটা সিস্টেম বা কন্টিনিয়াস প্রসেস।


বরং এক্ষেত্রে কোনরুপ মিল না থাকাই অস্বাভাবিকতার লক্ষন।



আপনি লেখাপড়া জানেন বলেই এই লেখাটি পড়তে পারতেছেন যা পরবর্তীতে সবাইকে বলতে পারবেন কিন্তু আপনি যদি লেখাপড়া না জানতেন অর্থাৎ নিরক্ষর থাকতেন তাহলে কি আপনি পড়তে পারতেন? নাকি কারো কাছে এত সুন্দর করে ব্যাখ্যা করতে পারতেন।


মহানবী সঃ যেহেতু পড়তেই পারতেন না সেহেতু ওনার পক্ষে পুরবর্তী কোন গ্রন্থ পড়ে সেই অনুযায়ী বলা সম্ভব নয়। সুতরাং পুর্ববর্তী গ্রন্থগুলোর লেখক যিনি একমাত্র তিনিই এটা করতে পারেন।

অর্থাৎ রব্বুল আমিন মহান আল্লাহ তালা। সুতরাং  কোরআন আল্লাহর বাণী। 


এমনকি মহান আল্লাহ তালা নিজেও মহানবী হজরত মুহাম্মদ সঃ কে সতর্ক করে দিয়ে বলেন..

কোরআন কি আল্লাহর বাণী?



মানবসৃষ্ট কোন গ্রন্থের প্রথমেই লেখক চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন না যে তার বই এ কোন ভুল নেই কিন্তু মহান আল্লাহ   আল্লাহ তালা পবিত্র কুরআন এ ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন পবিত্র কোরআন শরীফ এ কোন ভুল নেই। কারন তিনি এই মহাবিশ্বের প্রভু মালিক। তিনি জানেন না এমন কিছু নেই।

কোরআন  আল্লাহর বাণী এই বিষয় এ আশা করি আর কোন সন্দেহ নেই। 


Post a Comment

0 Comments